সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় বিএনপি। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুধবার তাদের জামিন দিয়েছেন। অন্যান্য মামলায়ও জামিন হওয়ায় তাদের মুক্তিতে বাধা নেই।
এদিকে আজ তাদের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেগুলো কারাগারে ইতোমধ্যেই পৌছানোর কথা।
বৃহস্পতিবার বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দুপুর ২টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
গতকাল বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের দুজনকে জামিন দেন।
মির্জা ফখরুল ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ যুগান্তরকে বলেন, মির্জা ফখরুল ও আমির খসরুর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় এই দুজনের কারামুক্তিতে বাধা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি হাজতি পরোয়ানা ছিল। বৃহস্পতিবার সেগুলো বাতিল হয়। আশা করি কিছুক্ষণের মধ্যেই উনারা কারামুক্ত হবেন।
২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বেলা ৩টার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। আহত হন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ সদস্য। এছাড়া কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।
এ ঘটনার পর ২৮ অক্টোবর গুলশানের নিজ বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আদালতে হাজির করা হলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২ নভেম্বর রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালে সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলায় তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারের পর মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১ মামলা ও আমির খসরুর বিরুদ্ধে ১০ মামলা দেওয়া হয়। এ মামলা ছাড়া তারা সব মামলাতেই জামিনে ছিলেন।